সাদা পোশাকে গ্রেপ্তার করতে এলে



হঠাৎ করে সাদা পোশাকধারী কিছু লোক এসে যদি আপনাকে বলে, তারা আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য আপনাকে তাদের সঙ্গে যেতে হবে, আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে আপনি কিছু বুঝে উঠার আগেই আপনাকে গ্রেপ্তার করে বসলো অথচ আপনি কোন অপরাধ করেননি কিংবা ঘটনাটি আপনার সাথে না ঘটে আপনার কোন আত্নীয়ের  সাথে ঘটলো অবস্থায় আপনি কি করবেন? আপনার কি কোন প্রতিকার আছে?
এমন পরিস্থিতির শিকার হলে
প্রথমেই মনে রাখতে হবে, দেশের একজন নাগরিক হিসেবে আপনার জানার অধীকার আছে কী কারনে আপনাকে গ্রপ্তার  করা হচ্ছে তাই প্রথমে জিজ্ঞাস করুন আপনার অভিযোগটা কি? সাথে তাদের পরিচয় জিজ্ঞাস করুন এবং তাদের পরিচয় পত্র দেখতে চাইবেন একা একা কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে আপনার পরিবার এবং আত্নীয়স্বজনকে জানান প্রয়োজনে আশপাশের প্রতিবেশীদেরকে খবর দিন প্রয়োজনে নিকটস্থ থানায় ফোন করে আপনার গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানান এবং থানা সম্পর্কে অবগত আছে কিনা তা জানার চেস্টা করুন আপনার বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিস্ট অভিযোগ না দেখাতে পারলে আপনাকে হয়তো ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখাতে পারে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার নিয়ে ২০১৬ সালের ২৪ মে আপিল বিভাগ রায় দিয়েছেন এবং কিছু দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, যা ১০ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে পূর্ণাঙ্গ রায় হিসেবে প্রকাশিত হয়
আপিল বিভাগের নির্দেশনা
আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী, “পুলিশ গ্রেপ্তারের কারন জানাতে বাধ্য থাকবে এবং তার পরিচয় পত্র দেখাতে বাধ্য থাকবে গ্রেপ্তারের সময় স্থান ব্যক্তির সাক্ষরসহ গ্রেপ্তারের পরপরই বিষয়ে মেমোরেন্ডাম তৈরী করবেন আত্নীয়স্বজন না পেলে ব্যক্তির নির্দেশনা নিয়ে তার বন্ধকে জানাতে হবে এজন্য সর্বোচ্ছ ১২ ঘন্টা সময় পাওয়া যাবে কোন যুক্তিতে, কার তথ্যে বা অভিযোগে ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাও উল্লেখ করতে হবে বিশেষ ক্ষমতা আইনে কাউকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা যাবে না গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির শরীরে কোনো আঘাত থাকলে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী তা রেকর্ড করে চিকিৎসার জন্য তাকে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের সনদ নিতে হবে
জামিনের জন্য চেস্টা করতে হবে
গ্রেপ্তার হলে গ্রেপ্তরের পর ২৪ঘন্টার মধ্যে আপনাকে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট আদালাতে চালান দিবেন ২৪ ঘন্টা সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর কোনো অবস্থাতেই (ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ ছাড়া) পুলিশ আপনাকে আটক রাখতে পারবে না সময় পুলিশ আপনাকে গুরুতর কোনো অভিযোগে রিমান্ডের আবেদন করতে পারে আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী ডায়েরীর অনুলিপি ছাড়া আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী কাউকে আদালতে হাজির করে আটকাদেশ চাইলে ম্যাজিস্ট্রেট, আদালত, ট্রাইব্যুনাল একটি বন্ড গ্রহন করে তাকে মুক্তি দেবেন আটক থাকা কোনো ব্যক্তিকে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী অন্যকোনো সুনির্দিষ্ট মামলায় যদি গ্রেপ্তার দেখাতে চায়, সে ক্ষেত্রে যদি ডায়েরীর অনুলিপিসহ তাকে হাজির না করা হয়, তাহলে আদালত তা মন্জুর করবেন না কোনো কারনে নিম্ন আদালতে জামিন না হলে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হতে হবে
লেখক: আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

বায়তুল হিকমার পরিচয়:

আব্বাসীয় যুগে সভ্যতা ও সংস্কৃতির বিকাশ

ইবনে কুতাইবার জীবনী